এনআইডি কার্ড সংশোধন বা উত্তোলনের ফি কত টাকাঃ
জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম এখন অনলাইন ভিত্তিক হয়েছে। আপনি চাইলে নিজেই নিজের মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে এনআইডি কার্ড সংশোধন বা উত্তোলনের ফি কত টাকা হিসাব করে নিয়ে এনআইডি কার্ড সংশোধন বা হারানো/নষ্ট কার্ড উত্তোলনের আবেদন করতে পারেন। কিন্ত সাধারণ নাগরিক এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন বা হারানো/নষ্ট এনআইডি কার্ড উত্তোলেনর ফি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানে না। এই ফি এর পরিমান সব সময় সবার জন্য একই হবে সেটিও ঠিক নয়। ফি এর পরিমান আপনার জন্য যা হবে আরেক জনের জন্য তা নাও হতে পারে। তাই এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের বা এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ড উত্তোলনের আগে অবশ্যই ফি কত টাকা জমা দিতে হবে তা হিসাব করে নেয়া উচিত।
এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন বা হারানো/নষ্ট এনআইডি কার্ড পুনরায় উত্তোলনের জন্য কত টাকা ফি জমা দিতে হবে তা জানতে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে যেকোন একটি ব্রাউজার ওপেন করবেন এবং ভিজিট করবেন services.nidw.gov.bd। নিচের ছবির মত একটি ওয়েবসাইট আসবে। এটি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট।
এখন মেনু বার থেকে ফিস এর উপর ক্লিক করতে হবে। তাহলে নিচের ছবির মতো দেখতে একটি ফরম আসবে এবং ফরমটি পুরন করতে হবে।
প্রথমে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর টাইপ করতে হবে। আপনার ১৭ সংখ্যা অথবা ১০ সংখ্যার এনআইডি নম্বর বা ভোটার আইডি নম্বর এই ঘরে টাইপ করবেন। আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর যদি ১৩ সংখ্যার হয় তাহলে প্রথমে আপনার জন্ম সাল টাইপ করবেন তারপর ১৩ সংখ্যার এনআইডি নম্বর বা ভোটার আইডি নম্বর টাইপ করবেন।
❖ আবেদনের ধরন: এই বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আবেদনের ধরণ অনুযায়ী আপনার ফি কত টাকা হবে সেটা হিসাব হবে। আবেদনের ধরণ থেকে নির্বাচন করুন এ ক্লিক করলে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, অন্যান্য তথ্য সংশোধন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন এবং রিইস্যু এই চারটি অপশন দেখাবে। এখন কোন অপশনে কি কি তথ্য সংশোধন করা যায় সেটা জানতে হবে।
১। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন: এই অপশন সিলেক্ট করে যদি ফি হিসাব করেন এবং ফি জমা দেন তাহলে এনআইডি কার্ডের বা ভোটার আইডি কার্ডের ছবি, স্বাক্ষর, বাংলা নাম, ইংরেজি নাম, জন্ম তারিখ, পিতার নাম, মাতার নাম, রক্তের গ্রুপ, এনআইডি কার্ডের পিছনে থাকা ঠিকানার যেমন- মৌজা/মহল্লা, গ্রাম, বাসা/হোল্ডিং নম্বর, ডাকঘর, পোষ্ট কোড, জন্ম স্থান ইত্যাদি সংশোধন করা যায়। আপনার যদি এগুলোর মধ্যে কোন এক বা একাধিক তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সিলেক্ট করবেন। অর্থাৎ যে তথ্যগুলো এনআইডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ডের উপর লেখা থাকে সেগুলো পরিবর্তন বা সংশোধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন অপশন সিলেক্ট করে ফি জমা দিতে হবে।
২। অন্যান্য তথ্য সংশোধন: অন্যান্য তথ্য পরিবর্তণ সিলেক্ট করে হিসাব করলে এবং ফি জমা দিলে লিঙ্গ, পাসপোর্ট নম্বর, পিতার এনআইডি নম্বর, মাতার এনআইডি নম্বর, পিতার মৃত্যুর তারিখ, মাতার মৃত্যুর তারিখ, বৈবাহিক অবস্থা, স্বামী/স্ত্রীর নাম ও এনআইডি নম্বর, ধর্ম, জন্ম নিবন্ধন সনদের নম্বর, পেশা, সনাক্তকরণ চিহ্ন, টিন নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর, মোবাইল নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রতিবন্ধী কি না সে তথ্য সংশোধন করা যায়। এগুলো ছাড়াও ভোটার তথ্যের মধ্যে বিদ্যমান স্থীয় ঠিকানা যেটি এনআইডি কার্ডে লেখা থাকে না যেমন- বিভাগ, জেলা, উপজেলা, আরএমও, ইউনিয়ন, মৌজা/মহল্লা, ওয়ার্ড নম্বর, গ্রাম/রাস্তা, বাসা/হোল্ডিং নম্বর, ডাকঘর, পোষ্ট কোড ইত্যাদি। আপনার যদি এগুলোর মধ্যে কোন এক বা একাধিক তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তাহলে অন্যান্য তথ্য সংশোধন সিলেক্ট করবেন। অর্থাৎ যে তথ্যগুলো এনআইডি কার্ডের বা ভোটার আইডি কার্ডের উপর লেখা থাকে না সেগুলো পরিবর্তন বা সংশোধনের জন্য অন্যান্য তথ্য সংশোধন অপশন সিলেক্ট করে ফি জমা দিতে হবে।
৩। জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন: জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন অপশন সিলেক্ট করে ফি হিসাব করে জমা দিলে ১ নং ক্রমিক ও ২ নং ক্রমিকে উল্লেখিত সকল তথ্যাদি সংশোধনের অপশন চালু হয়। অর্থাৎ কোন ব্যক্তির যদি নিজের নাম এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নং ভুল থাকে তাহলে তার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন সিলেক্ট করে ফি জমা দিতে হবে।
৪। রিইস্যু: রিইস্যু অপশন সিলেক্ট করলে হারানো বা নষ্ট হওয়া বা স্থানান্তরিত ভোটারদের এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ড উত্তোলনের ফি হিসাব করে তা আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে। অর্থাৎ যেকোন কারণে পুনরায় একটি এনআইডি কার্ড উত্তোলন করতে হলে রিইস্যু অপশন সিলেক্ট করতে হবে।
❖ বিতরণের ধরণ: জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের ক্ষেত্রে বিতরণের ধরণের মধ্যে সাধারণ, সাধারণ স্মার্ট কার্ড অপশন পাওয়া যাবে। তবে বিতরণের ধরণ সাধারণ রাখাই উত্তম। সংশোধনের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাধারণ স্মার্ট কার্ড বিতরণ এখনো চালু হয়নি তবে পরবর্তীতে চালু হতে পারে।
রিইস্যু'র ক্ষেত্রে সাধারণ, জরুরী, সাধারণ স্মার্ট কার্ড এবং জরুরী স্মার্ট কার্ড এই ৪টি অপশন পাওয়া যাবে। তবে এ ক্ষেত্রেও সাধারণ নির্বাচন করাই ভালো। বাকি অপশনগুলোর কার্যক্রম এখনো চলমান নয়। তবে পরবর্তীতে চালু হতে পারে।
No comments:
Post a Comment